x 
Empty Product

নওগাঁর সাপাহারে পুর্ব শক্রুতার জের ধরে সংঘবদ্ধ দুবৃত্তের দল কর্তৃক রাতের অন্ধকারে এক অসহায় মহিলার আম বাগানের ৫০টি আমগাছ উপড়ে ফেলে প্রায় ৫০হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করার অভিযোগ উঠেছে।
 থানায় দাখিলকৃত অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে উপজেলার তিলনা ইউনিয়নের পদলপাড়া গ্রামের মোঃ জয়নাল আবেদীনের কন্যা মোসাঃ রেবেকা সুলতানার ভোগদখলীয় সম্পত্তির উপর স্থাপিত আম বাগানে পুর্বশক্রুতার জের ধরে ওই গ্রামের কতিপয় অসাধু ব্যাক্তি গত ২রা জুলাই রাতে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। দ-ুবৃত্তরা এ সময় ওই বাগানের প্রায় ৫০ টি আমগাছের চারা উপড়ে ফেলে ও বাগানের চারী পাশের বাঁশের বেড়া চুরি করে নিয়ে যায়। এতে ওই বাগানের মালিকের প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়। বাগান মালিক রেবেকা সুলতানা ঢাকায় বসবাস করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য গত ৪ঠা জুলাই সাপাহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশের এস আই মনিরুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন যে তদন্ত পুর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২০০ হেক্টর বাগানের আম পচে গেছে। ওই উপজেলার দুটি ইটভাটর বিষাক্ত ধোঁয়া ও তাপে বিভিন্ন জাতের অর্ধকোটি টাকার ৭০ হাজার মণ আম নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা জানান। এদিকে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার শতাধিক বাগানমালিক ও ব্যবসায়ী।

নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার এ উপজেলার হেয়াতপুর, চকজোনিদ, হোলাইজোনা এলাকার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ৪৫০টি আম বাগান করা হয়েছে। এছাড়া এসব এলাকার বসতবাড়িতে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে আমগাছ রয়েছে। নবাবগঞ্জ উপজেলায় প্রতি হেক্টরে আমের উৎপাদন হয় ৩০০-৩৫০ মণ। মাহমুদপুর ইউনিয়নেই প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে।
গত বুধবার মাহমুদপুর ইউনিয়নের চকদেয়ানত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দাউদপুর-ভাদুরিয়া সড়কের উত্তর পাশে পাশাপাশি এমএমবি ও এমআরটি নামে ইটভাটা দুটি নির্মাণ করা হয়েছে। ওই দুই ভাটার ১০ থেকে ২০ গজের মধ্যে চারদিকে রয়েছে অনেক আমবাগান।
স্থানীয় আম ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ওই এলাকার এমএমবি ও এমআরটি ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের তাপে আমগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া আগের তুলনায় আমের উৎপাদনও অনেক কমেছে। তারা লাখ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে চাষীদের কাছ থেকে বাগান কিনে নিয়ে আমের পরিচর্যা করেছেন। আর ১০-১৫ দিন পর আম বিক্রির উপযোগী হতো। এ সময় বাগানের সব আম পচে যাওয়ায় এখন তাদের পথে বসতে হবে।
বাগানমালিকরা জানান, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর দিনাজপুর আম চাষ অন্যতম অর্থকরী ফসল হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর আমের মৌসুমে এ এলাকার বাগান থেকে কোটি কোটি টাকার আম বিক্রি হয়। কিন্তু নিয়মনীতি না মেনে ফসলি জমি ও শত শত আম বাগানের পাশে ইটভাটা গড়ে ওঠায় সম্ভবনাময় এ খাতটি আজ ধ্বংস হতে চলেছে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় আমচাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আখেরুর রহমান বলেন, ইটভাটার ধোঁয়া ও তাপে আম পচে গেছে, না অন্য কোনো কারণে নষ্ট হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
চকদেয়ানত এলাকার এমএমবি ইটভাটর মালিক হারুনুর রশিদ বলেন, তার ভাটার চিমনি ১২২ ফুট উঁচু। তাই তার ধোঁয়ায় নয়, বরং এমআরটি ইটভাটার গ্যাসের কারণে আম পচে গেছে বলে তার ধারণা।
অন্যদিকে এমআরটি ইটভাটার মালিক মো. রহিম বাদশা জানান, তাদের ইটভাটা পরিবেশ অধিদফতর থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চালানো পার্শ্ববর্তী এমএমবি ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় আমবাগানগুলোর ক্ষতি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে বুধবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত আমবাগান পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হামিম রেজা। তিনি বলেন, বাগানগুলোর আম ইটভাটার ধোঁয়া ও তাপেই যে পচে গেছে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এসব আমবাগানে ব্লাক টিপ রোগ দেখা দিয়েছে, যা শুধু ইটভাটার কালো ধোঁয়া ও তাপের কারণে হয়ে থাকে। ইটভাটা দুটি অবিলম্বে বন্ধের জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবেন বলে জানান।